news bazar24: নীচে কল্লোলিনী গঙ্গা। উপরে হাওড়া ব্রিজ। সেতুর একপাশ থেকে দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দিরের চূড়া দেখতে পাওয়া । প্ল্যাটফর্মটি ব্রিজ থেকে সিঁড়ি বেয়ে একেবারে নিচে। দাঁড়িয়ে আছে মেট্রোরেল। সাধারণ জনগণের জন্য। ঝকঝকে বোর্ডগুলো ট্রেনের ভেতরে সহজেই পড়া যাচ্ছে । প্রবেশ করলেই দেখতে পাবেন কামড়ার নীল আলো যেমন গঙ্গার তলদেশে বয়ে যাচ্ছে। না, এটা আমাদের পরিচিত হাওড়া স্টেশন নয়। পুরো ব্যাপারটাই একটা ‘থিম’। উল্টাডাঙার কবিরাজ বাগান সর্বজনীন। উল্টাডাঙ্গা মুচিবাজার রোডে। এ বছর এই পুজো ৫৯ বছরে পা দিল। পুজোর প্রধান উদ্যোক্তা হলেন কলকাতা পুরসভার 14 নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলর অমল চক্রবর্তী৷ থিম প্ল্যানিং থেকে শুরু করে পুজোর সব আয়োজনের মাস্টারমাইন্ড তিনি।

কখনো দার্জিলিং এর টয় ট্রেন আবার কখনো আস্ত বিমান। এখন হাওড়া ব্রিজের সঙ্গে মেট্রো রেল। প্রতি বছর একটি বিশেষ থিম এই পূজার বৈশিষ্ট্য। কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে অমল বাবু বলেন, ‘আমার এলাকায় অনেক গরিব মানুষ থাকেন। তাদের সবার পক্ষে টিকিট কিনে প্লেনে বা মেট্রোতে চড়া সম্ভব নয়। অনেকেই আছেন যারা শুধু দার্জিলিং বা সেখানে টয় ট্রেনের কথা শুনেছেন। আমি চেষ্টা করি এই মানুষগুলোকে অন্তত একদিনের জন্য এই জিনিসগুলো উপভোগ করতে। তাই আমি এই মত থিম তৈরি । দর্শক এটা উপভোগ করলে আমার ভালো লাগবে ।’ যত্ন নিয়ে ধীরে ধীরে তৈরি করা হয় এই থিম। এবছর গোটা বিষয়টি তৈরি করতে লেগেছে ৭৪ দিন।

তৃতীয়ার দিনে কবিরাজ বাগানের সার্বজনীন পুজোর উদ্বোধন করলেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। সবার জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে পূজা মণ্ডপ। প্রায় সাড়ে ছয় একর জমির ওপর এই পূজার আয়োজন করা হয়। একসঙ্গে 250 দর্শক প্রবেশ করছে এই মণ্ডপে । প্রতিদিন কত দর্শনার্থী আসছে? উদ্যোক্তারা জানান, তাদের পূজায় প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই লাখ দর্শনার্থী আসছেন ।

আর শুধু পুজোর আয়োজনই নয়। মহালয়া ও তৃতীয়ায় নারী, শিশু ও বয়স্কদের জন্য বস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি ছিল। পূজায় প্রতিদিন ভোগের ব্যবস্থা থাকে। অষ্টমীর দিন সেই খাবার মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হয়। ওই দিন প্রায় ২০,০০০ মানুষকে পোলাও, আলুর দম, চাটনি ও পায়েস খাওয়ানো হয়েছিল। এলাকার বাসিন্দা ছাড়াও আগত সকল দর্শনার্থীকে এই ভোগের প্যাকেট দেওয়া হয়। তবে দশমীতে বিসর্জন হয় না। দ্বাদশীর দিন এই পুজোর প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। অবশ্য দশমীতে সিঁদুর খেলা হয়। দ্বাদশীতে বিসর্জনের পর আবার নতুন থিমের ভাবনা শুরু হয়। পরের বছরের জন্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *