news bazar24 : আর একদিন পর মহালয়া । মহালয়া পড়েছে ২ অক্টোবর। এই দিনটি দুর্গাপূজার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কিন্তু দুর্গাপূজার সঙ্গে এর সরাসরি কোনো সম্পর্ক নেই। শাস্ত্র অনুসারে, মহালয়া হল একটি অমাবস্যার দিন, সেদিন সাধারণত পূর্বপুরুষদের পূজা বা তর্পণ করা হয়। বিশ্বাস করা হয় যে এই দিনে প্রার্থনা করলে আপনার পূর্বপুরুষরা নরকের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবেন। তারা এই দিনে জল পেয়ে খুশি হন এবং পূর্বপুরুষরা আশীর্বাদ করেন।

মহালয়া হল পিতৃপক্ষ দেবীপক্ষের সন্ধিদিন । ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের প্রতিপদ থেকে শুরু করে পরবর্তী অমাবস্যা পর্যন্ত (যা আশ্বিন মাসে পড়ে) পিতৃপক্ষ। পুরাণ অনুসারে এই দিনগুলিতে ব্রহ্মার আদেশে কুলপতিরা মনুষ্যলোকে আসেন। এউদ্দেশ্যে কিছু অর্পণ করাই রীতিই হল তর্পণ করা ।

লোকমতে বিশ্বাস করা হয় , এই সময়ে আত্মাদের কিছু নিবেদন করা হলে তা তাদের কাছে সহজে পৌঁছে যায়। এই বিশ্বাস থেকেই পুরো (পিতৃ) পক্ষকাল (১৫ দিন) সময় পিতৃপুরুষদের স্মরণ করা হয় এবং তর্পণ করা হয়।

এ বার ২ অক্টোবর মহালয়া। সেই দিন সকাল থেকেই মানুষ পিতৃপুরুষদের জল নিবেদন করবে। আগের রাত থেকেই এই তিথিটি পড়ছে। যাইহোক, সম্পর্কিত আচারগুলি খুব ভোরে পালিত হয়।

কুতুপ মুহূর্ত বলে একটি কথা আছে। মনে করা হয়, সেই সময়টাই তর্পণের শ্রেষ্ঠ সময়।

গঙ্গাজল, তিল, সাদা ফুল, কুশ ইত্যাদি দিয়ে তর্পণ অনুষ্ঠান করা হয়, তবে অনেক সময় তর্পণের জন্য গঙ্গায় বা নদীতে যাওয়া সম্ভব হয় না। যাইহোক, এতে কোন অসুবিধা নেই, যেহেতু একজন সুব্রাহ্মণ বাড়িতে ডেকে বা নিজের থেকেই তর্পণ করা যেতে পারে ।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল একটি ধারণা ছিল যে মেয়েরা তর্পণ করতে পারে না। কিন্তু পরবর্তীতে এসব নিষেধাজ্ঞা অচল হয়ে গেছে। এখন মেয়েরাও তর্পণ করতে পারে।

কর্ণকে ১৫ দিনের জন্য এই স্মরণ তর্পণ করতে মর্ত্যে পাঠানো হয়েছিল । সেটা একটা ভিন্ন গল্প। অনেকে দিনটিকে দেবীপক্ষের সূচনা বলে থাকেন। মহালয়ার পিতৃপক্ষের শেষ দিন। পরের দিন শুক্ল প্রতিপদে দেবীপক্ষ শুরু হয়। সেই দিন থেকে কোজাগরী পূর্ণিমা পর্যন্ত ১৫ দিন দেবীপক্ষ থাকে ।

প্রসঙ্গত, মহালয়ার দিনে অনেক জায়গায় দেবী দুর্গা পুজাও পালিত হয়। ‘উপলব্ধি’ অর্থে জাগরণ। মহালয়ার পর দেবীপক্ষ, মাতৃপক্ষ ও শুক্লপক্ষের শ্রদ্ধায় ঘট স্থাপনের মাধ্যমে শারদীয়া দুর্গাপূজা শুরু হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *