” শিউলি ভেজা চোখের পাতা ” -মৈত্রেয়ী মুখোপাধ্যায়

শিউলি ভেজা চোখের পাতা

       
      -মৈত্রেয়ী মুখোপাধ্যায়

শিশিরে শিশিরে ভেজা শিউলি আমি। আজও বিছিয়ে রেখেছি আগমনের পথে ভেজা চোখের পাতা । আমি আমার সুবাসে মায়ের পদধ্বনির বার্তা পাঠাই শরতের আকাশে বাতাসে। ধরণীর অন্তস্থলে জগনময়ীর আগমনের বার্তা রূপে ভৈরব আর ভৈরবীর আলাপে মিশে যাই সুবাস রূপে।
আমি জাগ্রত করি এ ত্রিভুবন ও ব্রহ্মলোককে উমা আসবে বলে।

পবিত্র যোগিনী রূপে মাতৃ চরণে বিলীন হবো বলেই শ্বেত গেরুয়া রূপের ছটায় ভুবন মাতাই আমি। শারদ রাতে মালারূপে উমার গলে আমারই বাস। আজ আগমনীর পদধ্বনিতেও আমার মনে বেজে চলেছে বিষাদের করুণ রাগিনী। পাঠাইনি কৈলাসে এবার জগনমাতার আমন্ত্রণ বার্তা। কে যেন মাড়িয়ে গিয়েছে আমায় ,ছিনিয়ে নিয়েছে আমার পবিত্রতা, সুবাস। এ যেন বিষাদময় অপবিত্র এক নিকষ কালো শারদ সকাল।

ধূসরতা লেগেছে শ্বেত বর্ণা কাশফুলেও। আমার কন্ঠে শুধুই আজ বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে। জানিনা কিভাবে পিষে মেরে ফেলেছে ওরা আমায় ও আমার আনন্দ গুলোকে। আমি শিউলি। এই শরতে প্রতিবাদী সুরে মেতেছি। আজ আমারও কণ্ঠে ফুঁপিয়ে অনুরণন করে দরবারির সুর শারদপ্রভাতে।

এ শরতের আগমনীর সুরের সুবাসে একটাই প্রশ্নবোধক চিহ্ন রয়ে যাবে আমার আকাশে বাতাসে উমার কাছে। এত নিষ্ঠুরতা কেন? কি দোষ করেছিল তিলোত্তমা? এ শরতে আমি শিউলি ,আমার জন্ম আর এক তিলোত্তমা রূপে।বিছিয়ে রেখেছি আমার ভেজা চোখের পাতা প্রতিবাদের ছায়া রূপে। আমিই শিউলি আমিই তিলোত্তমা। আমার আগমন যুগে যুগে তিলোত্তমা রূপে শিউলির মাঝে। বিছিয়ে রেখেছি ভেজা চোখের পাতা আগমনীর পথে শিউলি রূপে ,প্রতিবাদ রূপে।

পুজোর আনন্দ

মালদার পুজো