” পুরোনো কাশফুল ”

         

                                       -পুষ্পেন দে

আমি মফস্বলের ছেলে। তার ওপর সেই সময়, সব সমস্যা সমাধানের সেরা ঠিকানা, ইন্টারনেট, সেটি ছিল না। ছিল বলতে, বোকা বাক্সে হাতে গোনা কয়েকটি বিনোদনের চ্যানেল। বেশি দিন না, আজ থেকে ১৬-১৭ বছর আগের কথা। দূর্গা পূজোয় যে তিন-চার মাস আগে থেকে প্যান্ডেল গড়তে শুরু হয় আর তার বাজেট কোটি টাকারও বেশি, এই বিষয়ে আমাদের কোনো ধ্যান ধারণায় ছিল না। আমাদের প্যান্ডেলের জন্য বাঁশ পরতো মোটামুটি সাতদিন আগে। মানে মহালয়ার পরপরই শুরু হয়ে যত তরজড়।

মাঠে কাশফুল তুলে আনা থেকে শুরু করে পাড়ার দাদাদের সাথে হাটবারে চাঁদাতোলা কিংবা প্রতিমা গড়ার সময় স্বপন জ্যোঠুর হাতে হাতে একটুখানি কাজ করে দেওয়া আনন্দ। সাতদিন আগে থেকে লেখাপড়া পুরোপুরি তো তাকে তুলে রাখা যেতনা, একটু নমঃ নমঃ করতে হত আরকি! পাছে মা যদি পূজোর দিনগুলো তেই বেড় হতে না দেয়!

বাঁশের খুঁটি পরতে না পরতেই বাঁদরের মতো একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে হাঁটা, খুঁটি ধরে উল্টো হয়ে ঝুলে পরা ছাড়াও আর একটা বিষয়, যেটার উন্মাদনা ছিল আলাদা পর্যায়ে, সেটা চোর- পুলিশ। হ্যা শুনতে একটু বোকাবোকা লাগছে বটে। কিন্তু এটাই ছিল সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। এই সাতদিন আগে থেকে পুরো পাড়ার ম্যাপ কাগজে এঁকে, মহড়া চলতো রীতিমত।

আজ আমি এই দিয়ে দুই সময় কালকে তুলনা করছিনা। কোন সময় টা ভালো, কোনো টা খারাপ, তাও নয়। শুধু এখন আর কাওকে খুঁটি ধরে ঝুলতে দেখিনা।

লেখা ~ পুষ্পেন দে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *