” নারী ” – নিধিশা দাস

” নারী ”

 

                  – নিধিশা দাস

কন্যা সন্তান হওয়ার সাথে সাথে অন্যের বাড়িতে পড়ে যায় এক অন্ধকারের পরিস্থিতি।

আমার পরিবার সম্পূর্ণ আলাদা যেখানে কন্যা সন্তান হওয়ার সাথে সাথে আমার পরিবারের সকলের মুখে এক অন্যরকম হাসি এসেছিল। আমার বাবা পুরো হসপিটাল কে মিষ্টি খাইয়েছিল ঠিক দ্বিতীয় বার যখন আমার বোন হয় একই ঘটনা ঘটে অবাক হয়ে যায় সকলে ভেবেছিল মাথাটা বোধ হয় খারাপ হয়ে গেছে। দ্বিতীয় কন্যা সন্তানের পরেও এক মা-বাবা কিভাবে এত খুশি হতে পারে?

এই প্রশ্নের উত্তর তখন কেউ দেয়নি। তারা ভাবতেও পারেনি কেন এত খুশি।

আমার মা বাবার কাছে কন্যা সন্তান হলো পুত্রসন্তানের থেকেও আগে তা বলে আদরে আতুকুতু করে মানুষ করেনি তারা।

মা শক্ত হলে বাবা নরম হতো। বাবা শক্ত হলে মা নরম হত।
এক কড়া শাসনের মধ্য দিয়ে তৈরি হয়েছি আমি।

* হাটতে গেলে পায়ে আওয়াজ হওয়া যাবে না।

* জল খেলে মুখে আওয়াজ হওয়া যাবে না।

* মুখ খুলে খাবার খাওয়াটা সঠিক নয়।

* পোশাকে একটা মার্জিন হওয়া প্রয়োজন।

একটু বড় হওয়ার পর যেন মনে হয়েছিল একটা একটি শাসন যেটা জেল খানার থেকেও করা।

কিন্তু ম্যাচিউর হওয়ার পর বুঝলাম এই শাসন টার খুবই প্রয়োজন সঠিক মানুষ তৈরি হওয়ার জন্য।

যারা এগুলোকে ব্যাকপার্টির ভাবে তারা নিজেরা কিছু করার আগে লোকের ওপর দোষটা দেয় বেশি, এগিয়ে যাওয়াটা অনেক পরে অলসতাটা তাদের সবার আগে।

দেখতে দেখতে ২৫ টা বছর পার হলো ।

একটু একটু করে নিজের প্রতিভা দিয়ে গোলাম একটা ছোট্ট জগত মায়ের কাছ থেকে শেখা আঁকাটা আজ হয়েছে আমার এক অন্যরকম হাতিয়ার।

যে সমাজ বলেছিল ও আচ্ছা দুটোই মেয়ে, ছেলে নেই ???

আজ তারাই বলে তাদের একটা মেয়ে থাকলে ভালো হতো।।

আমি কি রাগ করি না হ্যাঁ কিছু কিছু কথা বাবা মায়ের সঙ্গে হয়ে থাকে আজও কথা কাটাকাটি।

তারপরে নিজেই আঘাত পাই। কারণ যে বাবা-মা বড় করেছে সে বাবা মাকে আঘাত দেওয়ার অধিকার আমাদের নেই।

আজ যে শাসনের জন্য এক অন্য জগৎ তৈরি করতে পেরেছি সেই মানুষগুলোকে ছোট করার অধিকার কোন সন্তানের নেই।।

যারা আজও বাবা মায়ের কথা ভাবে তাদের শাসনকে ভালবেসে গ্রহণ করে তাদের জীবনী তৈরি হতে পারে এক অন্যরকম।

বাবা মায়ের কাছ থেকে সব থেকে প্রিয় জিনিস যখন তাদের তাদের নিজের সন্তানের নামে বা পরিচয় কেউ চেনে।

আর আমার কাছে খুশি জিনিস যখন কেউ আমার বাবা বা মায়ের পরিচয় আমাকে চেনে।

তাই মেয়ে বলে যে সমাজ যতই ছোট করুক বাবা-মায়ের স্পর্শ বাবা মায়ের ভালোবাসা সেই মেয়েকে দশটা ছেলেরও আগে রাখতে পারে।

ঝগড়া করে নয় মারপিট করে নয় নিজের কর্মে বুঝিয়ে দাও তুমি নারী তুমি সব পারো।
Tanusri’s Art & Craft and – আজ হয়েছে পরিচয়।

মেয়ে বলে পিছিয়ে থাকতে নেই এগিয়ে আসতে হয়। ভয় পেতে নেই লড়ে যেতে হয়।। হাল ছাড়তে নেই ফালটিকে শক্ত হাতে ধরে কাঁটা ভরা পথে একটু একটু করে এগিয়ে যেতে হয়।। অনেক কঠুর কথা শুনতে হয় কোন কিছু পাওয়ার জন্য।।

চোখের অশ্রু কে বিদায় জানাতে হয়।
এই সকল কিছু জন্য মা বাবার একটি সঠিক শাসনের প্রয়োজন হয়।

“নারী ভরলে হারতে শিখিনি, নারী বলে থমকে যেতে শিখিনি, অহংকার করে নিজেকে সবার আগে রাখতে শিখিনি, শিখেছি লড়তে শিখেছি গড়তে, শিখেছি এক দলবদ্ধ হয়ে কাজ করতে”

 

 

পুজোর আনন্দ

মালদার পুজো