news bazar24 : করোনার জেরে গাতবছর কড়া নিয়ম মেনেই পালিত হয়েছিল সাহা বাড়ির পুজো তবে এবছর দুর্গা পুজোয় করা হচ্ছে না কোনওরকম কাঁটছাট। শুধুমাত্র দর্শনার্থীদের জন্য থাকছে একাধিক নিয়ম৷ বনেদি বাড়ির পূজার মধ্যে বালুরঘাটের সাহা বাড়ির পূজা অন্যতম। ১৮০ বছরের পুরনো এই পুজো প্রতিষ্ঠাতা বনমালী সাহা রায়।  বাংলাদেশের পাবনা জেলার জামাত্তার বাসিন্দা ছিলেন তিনি। বাংলাদেশ থেকে একদিন জল পথে বালুরঘাটে ব্যবসা করতে আসার সময়   স্বপ্নাদেশ পান। মা এর স্বপ্নাদেশ পেয়েই বালুরঘাটের বিশ্বাসপাড়া এলাকায় মা দুর্গার পুজো শুরু করেন। সাহা বাড়িতে দেবী দুর্গার পুজোর সুচনা এভাবেই । বর্তমানে ওনার উত্তরসূরি কালীকৃষ্ণ সাহা রায় এই পূজা করে আসছেন। আর পাঁচটা দুর্গা পূজার থেকে সাহা বাড়ির দুর্গার মূর্তি একদম আলাদা। প্রতিমার বিশেষত্ব এখানকার পুজা কে এক বিশেষ জায়গা দিয়েছে ।

দেবী দুর্গার পাশে গণেশ ও কার্তিকের  স্থান পরিবর্তন থাকে এটাই এখানকার বিশেষত্ব। দুর্গার ডান দিকের বদলে বাম দিকে থাকে গণেশ। আবার ঠিক বাম দিকে কার্তিকের থাকার কথা থাকলেও দুর্গার ডান দিকে থাকে।  বংশ পরমপ্রায় এভাবেই মা পূজিত হয়ে আসছেন এখানে । মৃৎশিল্পীরা তেমনি প্রতিমা করে আসছেন। তবে এবার করোনা ও লকডাউনের জন্য সামাজিক স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পুজোর আয়োজন করছেন সাহা পরিবার৷ তবে নিয়মে কোন খামতি থাকেনা কোন বছরেই।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এক আশ্চর্য ঘটনা বনমালী সাহা  এই পূজা যখন শুরু করেন মৃৎশিল্পী অন্য দুর্গা প্রতিমার মত সাহা বাড়ির দুর্গা প্রতিমা করেছিলেন। কিন্তু পর দিন news bazar24 : সকালে সবার নজরে আসে গণেশ ও কার্তিকের স্থান পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে।  নিজেদের ই কাজের ভুল ভেবে  মৃৎশিল্পী তাদের পুনরায়  স্থান পরিবর্তন করেন।

কিন্তু পরের দিন এ কি কাণ্ড সকালে গণেশ ও কার্তিকের আবার স্থান পরিবর্তন হয়ে যায়। মা এর নির্দেশ বুঝতে পেরে  বনমালী সাহা রায় এভাবেই মায়ের পুজো দিতে আরম্ভ করেন। সেই থেকে একই নিয়ম নিষ্ঠা সহকারে সাহা বাড়ির দুর্গা পূজা হয়ে আসছে।

মন্থন ষষ্ঠীতে প্রতিমা তৈরি  হয় মন্থন ষষ্ঠীতে । মায়ের চক্ষুদান  ও প্রতিমার রং সব সম্পূর্ণ করতে হয় মহালয়ার দিনই ।  ভোগে থাকে পরমান্ন , সাহা বাড়ির পুজোয় অন্নভোগ হয়না । পুজোর কয়েকদিন নিরামিশ খাওয়ার চল রয়েছে।

বনমালী সাহার বর্তমান উত্তরসূরি কালীকৃষ্ণ সাহা রায়  এর কাছ থেকে আমরা এই পুজোর ইতিহাস জান্তেপারি ।বনমালী সাহার  সময় থেকে যে ভাবে মায়ের পুজো হয়ে আসছিল, এখন ঠিক একই ভাবে মায়ের পুজো হয় নিয়মে কোন পরিবর্তন আনা হয়নি ।পুজোর সব দিন মাকে নিরামিষ ভোগ দেওয়া হয় ও নিজেরা নিরামিষ খাওয়া হয়। এছাড়াও মায়ের ভোগ হিসেবে দুধের তৈরি নানা উপকরণ দেওয়া হয়। বংশ পরম্পরায় পুরোহিত, মৃত শিল্পী প্রতিমা তৈরি করে আসছেন। এবিষয়ে সাহা পরিবারের সদস্য প্রিতম কৃষ্ণ সাহা রায় জানান, করোনার জন্য এবারের পুজোয় তেমন কোনো কাটছাঁট করা হয়নি৷ তবে একসঙ্গে পাঁচ জনের বেশি কেউ অঞ্জলি দিতে পারবে না এবং এবারে মিষ্টান্ন ভোগ কারও নেওয়া হবে না। শুধুমাত্র ফল-মূল ভোগ নেওয়া হবে। মন্দির প্রাঙ্গণে সকলকেই মাস্ক পড়ে আসতে হবে। এছাড়াও যাতে মন্দির চত্বরে ভিড় না হয় তার জন্য বিশেষ নজর রাখা হবে৷ সবমিলিয়ে মা এর আরাধনা শুভ বার্তা এনে দিক এমনটাই সকলের কামনা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *